Health Tips for Women
গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের দেহের প্রায় ৭০ পার্সেন্ট পানি। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে নিয়ম করে পানি পান করা খুবই জরুরী।
- 30 Achievable Mental Health Goals to Set in 2025
- List of Foods to Eat With Acid Reflux
- The Healing Elixir: 10 Surprising Benefits of Drinking Hot Water
- গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সুস্থ জীবন যাপন করার জন্য আমরা কত কিছুই না করে থাকি। একটু সুস্থ জীবন যাপন করার জন্য আমাদের কত চেষ্টা। কিছু সহজ কাজ করেও কিন্তু আমরা সুস্থ জীবন যাপন করতে পারি। প্রতিদিন আমরা সবাই পানি পান করে থাকি এই পানি আমাদের জীবনের জন্য অতি জরুরী। আর পানির অপর নাম জীবন। একজন সুস্থ ব্যক্তির প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতে হয়।
পানিটা যদি একটু গরম করে খাই। মানে বুঝলেন না তো? বলছি যদি আপনি আপনার সকালটা কুসুম গরম পানি দিয়ে শুরু করেন তাহলে আরো ভালো কাটবে সারাটা দিন।
কুসুম গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা
চলন কুসুম গরম পানি পান করলে আমাদের দেহে কি কি উপকার হয় তা জেনে নেই —
ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ
বর্তমান সময়ে ওজন বেড়ে যাওয়া বা মুটিয়া যাওয়াটা সব ধরনের বয়সের লোকের জন্য কমন সমস্যা। প্রতিদিন গরম পানি পান করলে আপনি এ সমস্যাটা থেকে অনেক দূরে থাকতে পারবেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানি পান করলে ধীরে ধীরে শরীরের মেদ ঝরতে শুরু করবে এবং আপনার অন্ত্রের জমে থাকা দূষিত পদার্থ গুলি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে গরম পানি।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ
আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে তাহলে আজ থেকেেই নিয়মিত গরম পানি পান করতে শুরু করুন।নিয়মিত সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য একটি খুবই কষ্টদায়ক রোগ। এর থেকে আমাদের আরও নানা রোগ হতে পারে যেমন- পাইলসের সমস্যা ।পাইলসের সমস্যার চিকিৎসা করা খুবই কঠিন একটি কাজ। নিয়মিত গরম পানি পান করলে কোলন ক্যান্সারের সমস্যাও আপনার কমে যাবে।
টক্সিক বের করে দেয়ঃ
নিয়মিত গরম পানি পান করলে আপনার দেহ থেকে খারাপ টক্সিন বের করে দিবে। গরম পানি পান করলে আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় এবং ঘামের সৃষ্টি হয়। ঘামের সাথে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন পদার্থগুলো বের হয়ে আসে।
পেটে গ্যাসের সমস্যা কমেঃ
আপনি যদি নিয়মিত গরম পানি পান করেন তাহলে আপনার গ্যাসের সমস্যা কমে যাবে। গ্যাসের সমস্যার জন্য আমরা কত ধরনের গ্যাসের ঔষধ সেবন করে থাকি। আপনি যদি ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করেন তাহলে আপনার পেটে গ্যাসের সমস্যা অনেক কমে যাবে।
রক্ত চলাচল উন্নত করেঃ
আপনি যদি নিয়মিত গরম পানি পান করেন তাহলে আপনার দেহের রক্ত চলাচল উন্নত হবে। শরীরে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলে আপনার হাই ব্লাড প্রেসার এর সম্ভাবনা কমে যাবে এবং কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা কমে যাবে।
আপনি যদি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করেন তাহলে আপনি রিলাক্স ফিল করবেন। কারণ সারাদিন আমাদের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। কাজ করার পর সন্ধ্যার পর থেকে আমরা আর এনার্জি পাই না এবং টায়ার্ড ফিল করতে থাকি। রাতের খাবারের পর হালকা কুসুম গরম পানি পান করলে আপনি রিলাক্স ফিল করবেন এবং রাতের ঘুম ভালো হবে।
সর্দি কাশি দূর করেঃ
সর্দি-কাশি একটি কমন রোগ। শীত আসলেই সমস্যাটা আরও বেড়ে যায়। আপনি যদি নিয়মিত গরম পানি পান করেন তাহলে সর্দি-কাশি সমস্যা দূর হবে। সর্দি-কাশি হলে শ্বাসনালীতে সর্দি জমে গিয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি করে। গরম পানি শ্বাসনালী থেকে সর্দি বের করতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। গরম জল খেলে ঠান্ডা জনিত কারণে নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যা কমে যাবে। আপনার সাইনাসের সমস্যা থাকলেও গরম জল খেলে কিছুটা আরাম পাবেন।
চুল পড়া কমায়ঃ
আপনি জেনে অবাক হবেন যে প্রতিদিন যদি আপনি নিয়ম করে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর সময় গরম পানি পান করেন তাহলে আপনার চুল পড়া সমস্যা অনেক কমে যাবে ।আপনার যদি চুল পড়ার সমস্যা থাকে তাহলে গরম পানি পান করা শুরু করে দেন ।গরম পানি পান করলে চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত হয়, চুলের আগা ফাটা সমস্যা দূর হয়।
কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখেঃ
প্রতিদিন গরম পানি পান করলে আমাদের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত থাকে। আমাদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র স্বাস্থ্যকর এবং আমাদের কন্ট্রোলের মধ্যে থাকলে আমরা আরো ভালোভাবে কাজ করার উৎসাহ পাই যার ফলে আমাদের কর্ম ক্ষমতা বাড়ে।
ত্বককে সুরক্ষিত রাখেঃ
নিয়মিত গরম পানি পান করলে আমাদের ত্বক হাইড্রেট থাকে ।এর ফলে আমরা সহজেই মুখে বলিরেখা থেকে মুক্তি পেতে পারি । আপনার ত্বকে যদি বলি রেখা না থাকে আপনাকে আরো ইয়ং ও সুন্দর লাগবে । আপনার মুখে ব্রণের সমস্যা থাকলেও নিয়মিত গরম পানি পান করলে ব্রণের সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন সহজেই।
খাবার হজমে সাহায্য করেঃ
গরম পানি খাবার হজমে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে গরম পানি পানে আপনার খাদ্যনালি একটিভ করে দেয়। গরম পানি যখন আপনার অন্ত্র এবং পেটে পৌঁছে যাবে তখন ওই অংশটুকু কে গরম পানি হাইড্রেট করে তুলবে। এর ফলে আপনার খাদ্য হজমে সাহায্য করে গরম পানি।
পিরিওড এর ব্যথা উপশম হয়ঃ
যেসব মহিলাদের পিরিয়ডের সময় ব্যাথা অনুভব হয় তারা নিয়মিত গরম পানি পান করলে এছাড়াও গরম পানি দিয়ে তলপেটে সেক দিলে ব্যথা উপশম হয়।
গরম পানি আপনি কখন পান করবেন? এবং কিভাবে পান করবেন?
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক, গরম পানি আপনি কখন পান করবেন? এবং কিভাবে পান করবেন?
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে গরম পানি পান করুন।
সকালে গরম পানির সাথে আপনি মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। মধুর উপকারিতা কথাতো আপনারা সবাই জানেন।
সতর্কতাঃ
- গরম পানি পান করার সময় আপনার লক্ষ্য রাখতে হবে পানিটা যেন অনেক বেশি গরম না হয়।
- পানিটা যেন হালকা গরম বা কুসুম গরম হয়।
- খুব বেশি গরম পানি খেলে আমাদের খাদ্যনালীর টিস্যুর ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে,মুখগহ্বর ওপুড়ে যেতে পারে।
- আপনি যদি খুব গরম পরিবেশে থাকেন,এক্সারসাইজ করেন তারপর গরম পানি না খাওয়াই ভালো।
- যত ব্যাস্তই থাকুন না কেন বসে পানি পান করুন।
গরম পানি খাওয়ার অপকারিতা
নিয়মিত গরম পানি পান করুন সুস্থ থাকুন। কিন্তু গরম পানি পান করার সময় উপরের বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। অতিরিক্ত গরম পানি কখনোই খাবেননা তার ফলে আপনার উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে। আপনি যদি গরম পানির পুরোপুরি উপকারিতা পেতে চান তাহলে কুসুম গরম পানি সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস করে পান করতে পারেন।
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে অবশ্যই আপনি কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্ঠা করবো। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সবাই সুস্থ থাকুন ,ভালো থাকুন।
আল্লাহ হাফেজ